বুদ্ধি কাকে বলে
মনোবিজ্ঞানে বুদ্ধির সংজ্ঞা নিয়ে বিভিন্ন মতবিরোধ রয়েছে। বিভিন্ন মনোবিজ্ঞানী বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ভিন্ন ভিন্ন বুদ্ধির সংজ্ঞা নির্ধারণ করেছেন। বুদ্ধি হল একটি জটিল প্রক্রিয়া এবং মনোবিজ্ঞানীদের মতে বুদ্ধি হল একটি মানষিক ক্ষমতা যা ব্যাক্তিকে নিত্যনতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে চলতে এবং জ্ঞান অর্জন ও প্রয়োগ করতে সাহায্য করে।
বুদ্ধির সংজ্ঞা :
বিভিন্ন মনোবিজ্ঞানী বুদ্ধির ভিন্ন ভিন্ন সংজ্ঞা নিরূপণ করেছেন। বুদ্ধির সংজ্ঞা গুলি সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হয়েছে।
মনোবিজ্ঞানী টারম্যানের বলেছেন বুদ্ধি হল বিমূর্ত চিন্তা করার ক্ষমতা এবং কোটেল এর মতে বুদ্ধি হল নতুন নৈপুণ্য লাভের স্বাভাবিক ক্ষমতা।
মনােবিদ প্যাটারসন এর মতে বুদ্ধি হল এমন একটি জৈবিক কৌশল যার সহায়তায় যে কোন জটিল পরিস্থিতির মধ্যে সমন্বয়সাধন করে একক প্রতিক্রিয়া করা যায়।
থার্স্টোনের বলেন বুদ্ধির লক্ষণ হল সহজাত প্রবৃত্তিগুলিকে সামাজিক দিক থেকে কার্যকর করা।
মনোবিজ্ঞানী স্টার্ন বলেছেন, বুদ্ধি হল জীবনের নতুন সমস্যা ও পরিস্থিতির সঙ্গে অভিযােজন করার সাধারণ মানসিক ক্ষমতা।
ডিয়ারবোর্ণ মনে করেন, বুদ্ধি হল শিখনের ক্ষমতা বা অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে লাভবান বা উপকৃত হওয়ার ক্ষমতা।
থর্নডাইক (Thorndjke) এর মতে, বুদ্ধি হল অনুষঙ্গ বা বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে সংযোগ স্থাপন বা আদর্শ প্রতিক্রিয়া করার ক্ষমতা।
বুদ্ধির বৈশিষ্ট্য :
বুদ্ধি ব্যাক্তির পূর্বের জ্ঞান বা অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন বিষয় শিখতে সাহায্য করে অর্থাৎ বুদ্ধির মাধ্যমে আমরা পূর্বের জ্ঞান বা অভিজ্ঞতার সাহায্য আমরা বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারি।
বুদ্ধির একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল বুদ্ধি ব্যাক্তিকে নিত্যনতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে।
বুদ্ধির ফলে ব্যাক্তি বিমূর্ত চিন্তা করতে সক্ষম হয়। বুদ্ধির সাহায্য ব্যাক্তি বিভিন্ন বিষয়ে সহজেই জটিল, সূক্ষ্ম এবং দার্শনিক ভাবনা ভাবতে পারে। মনোবিজ্ঞানী টারম্যান বুদ্ধির সংজ্ঞায় বলেছেন বুদ্ধি হল বিমূর্ত চিন্তা করার শক্তি।
বুদ্ধি আমাদের বিভিন্ন ব্যাক্তি, বস্তু ও ভাবনার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপনে সাহায্য করে। যখন বিভিন্ন বস্তুর মধ্যে থেকে আমাদের একটি বস্তু বেছে নিতে হয় তখন বুদ্ধি আমাদের বস্তুটি বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে এবং তিনটি ভিন্ন আকারের বস্তুর মধ্যে কোনটি বড়, কোনটি মাঝারি আর কোনটি ছোট তা নির্ণয় করতে গেলেও আমরা বুদ্ধির সম্পর্কঘটিত চিন্তনের সাহায্য গ্রহণ করি।
বুদ্ধি হল একটি সহজাত ক্ষমতা যা ব্যাক্তি জন্ম সূত্রে বুদ্ধির অধিকারী হয়ে থাকে। বুদ্ধি অর্জন করা যায় না এবং এটিকে কার্যকর করতে অনুশীলনের প্রয়োজন।
বুদ্ধি ব্যাক্তির ব্যাক্তিতের পার্থক্য সৃষ্টি করে থাকে। বুদ্ধির ফলে ব্যাক্তি আচার আচরণ করার করার কৈশল ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।
বুদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল ক্ষিপ্রতা। বুদ্ধির এই বৈশিষ্ট্য যে কোন সমস্যা অল্প সময়ের মধ্যে সমাধানে সহায়তা করে। বাস্তবে দেখা যায় , শ্রেণিতে বুদ্ধিমান শিক্ষার্থীরা অল্প বুদ্ধিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের তুলনায় ক্ষিপ্রতার সঙ্গে যেকোনো সমস্যা সমাধান করে।
বুদ্ধির ফলে আমরা আরোহ এবং অবরোহ পদ্ধতিতে যে কোন বিষয় বিচার বা বিশ্লেষণ করে মূল্যায়ন গ্রহণ করে থাকি।
আরও পড়ুনঃ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন