উচ্চ মাধ্যমিক দর্শন প্রশ্ন উত্তর - বচন কাকে বলে

প্রিয় শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক দর্শন প্রশ্ন উত্তর বচন কাকে বলে দর্শন ও বচন কয় প্রকার ও কি কি হল উচ্চ মাধ্যমিক দর্শন এর খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন যার উত্তর এই পোস্টটিতে দেওয়া হয়েছে। দ্বাদশ শ্রেণীর দর্শন বিষয়ের দ্বিতীয় অধ্যায় থেকে বচন কাকে বলে বচনের শ্রেনীবিভাগ ও বচনের বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তর নিচে দেওয়া হল class 12 দর্শন প্রশ্ন উত্তর গুলি আগামী 2022 উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য খুবই ইম্পর্টেন্ট।

বচন কাকে বলে

বচন হল ভাষায় প্রকাশিত অবধারন। 
অথবা,
একটি বিবৃতি বা ঘোষক বাক্য যেখানে দুটি পদের মধ্যে কোনো সম্পর্ককে স্বীকার বা অস্বীকার তাকে বচন বলে। যেমনঃ সকল মানুষ হয় মরণশীল।
এখানে মানুষ হল উদ্দেশ্য পদ এবং মরণশীল হল বিধেয় পদ।

বচন কয় প্রকার ও কি কি

সম্বন্ধ অনুযায়ী বচনকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় - ১) সাপেক্ষ বচন ২) নিরপেক্ষ বচন

সাপেক্ষ বচন কাকে বলে
যে বচনগুলি প্রকাশিত হওয়ার জন্য উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদ দুটি কোন না কোন শর্তের উপর নির্ভরশীল হয় তাকে সাপেক্ষ বচন বলে।
যেমনঃযদি রাম আসে তবে শ্যাম যাবে

নিরাপেক্ষ বচন কাকে বলে
যে বচনগুলি কোনপ্রকার শর্ত ছাড়াই প্রকাশিত হতে পারে অর্থাৎ যে বচনগুলি প্রকাশিত হওয়ার জন্য উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদ দুটি কোন শর্তের উপর নির্ভরশীল হয় না তাকে নিরাপেক্ষ বচন বলে। 
যেমনঃ ঘাস হয় সবুজ

গুন অনুযায়ী বচনকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় -
১) সদর্থক বচন (হ্যা বাচক) 
২) নঞর্থক বচন (না বাচক) 

সদর্থক বচন কাকে বলে
যে বচনে উদ্দেশ্য পদটি বিধেয় পদ সম্পর্কে কোন কিছু স্বীকার করে তাকে সদর্থক বচন বলে।
যেমন: সকল মানুষ হয় মরণশীল জীব।
সদর্থক বচন হল A বচন ও I বচন।

নঞর্থক বচন কাকে বলে
যে বচনে বিধেয় পদটি উদ্দেশ্য পদ সম্পর্কে কোন কিছু অস্বীকার করে তাকে নঞর্থক বচন বলে।
যেমন: কোন মানুষ নয় সৎ ব্যক্তি।
নঞর্থক বচন হল E বচন ও O বচন।

পরিমান অনুযায়ী বচনকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় -
১) সামান্য বচন ২) বিশেষ বচন

সামান্য বচন কাকে বলে
যে বচনে বিধেয় পদটি সমগ্র উদ্দেশ্যপদ সম্পর্কে স্বীকার বা অস্বীকার করা হয় তাকে সামান্য বচন বলে। 
যেমন: কোন পশু নয় মানুষ।
সামান্য বচন হল A বচন ও E বচন।

বিশেষ বচন কাকে বলে
যে বচনে বিধেয় পদটি উদ্দেশ্যপদের কিছু আংশিক বা অনির্দিষ্ট সম্পর্কে স্বীকার বা অস্বীকার করে তাকে বিশেষ বচন বলে।
যেমন: কোন কোন মানুষ হয় সৎ।
বিশেষ বচন হল I বচন ও O বচন।

গুণ ও পরিমানে যুগ্ম ভিত্তিতে নিরপেক্ষ বচন চার প্রকার যথা: 
সামান্য সদর্থক বচন বা A বচন
সামান্য নঞর্থক বচন বা E বচন
বিশেষ সদর্থক বচন বা I বচন
বিশেষ নঞর্থক বচন বা O বচন
বচন কাকে বলে দর্শন

বচন কাকে বলে ও বচনের বৈশিষ্ট্য :

১) প্রত্যেকটি বচনের দুটি পদ থাকে একটি উদ্দেশ্য পদ ও একটি বিধেয় পদ। শুধুমাত্র উদ্দেশ্য পদ অথবা শুধুমাত্র বিধেয় পদ দ্বারা বচন গঠিত হতে পারে না।
২) যেকোনো বাক্যে উদ্দেশ্য ও বিধেয়র মধ্যে একটি সম্বদ্ধকে ঘোষনা করা হয়ে থাকে অর্থাৎ উদ্দেশ্য ও বিধেয় যে পারস্পরিক ভাবে বিচ্ছিন্ন নয় সেই বিষয়টিকে উল্লেখ করা হয় সংযোজকের মাধ্যমে।
৩) উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের সম্বন্ধকে দু ভাবে স্থাপন করা যেতে পারে সদর্থক ভাবে এবং নঞর্থক ভাবে
৪) উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের মধ্যে যে সমন্ধ প্রতিষ্ঠিত হয় তা শর্তসাপেক্ষ ভাবেও হতে পারে আবার তা শর্ত নিরাপেক্ষভাবেও হতে পারে অর্থাৎ উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের সম্বন্ধ শর্তাধীন অথবা শর্ত হীন দুই হতে পারে।
৫) যেকোনো বচনই যুক্তির উপাদান বা অবয়ব রূপে গন্য হতে পারে। কারন যুক্তি গঠিত হয় শুধু মাত্র বচন দিয়েই সে কারণেই বচনগুলি যুক্তির অংশ রূপে বিবেচিত
৬) বচনের প্রকৃতি বা স্বরূপের ওপরেই যুক্তির স্বরূপ বা প্রকৃতি নির্ভর করে তাই বচন হল যুক্তির প্রকৃতি বা স্বরূপ নির্ণায়ক 
৭) সমস্ত বচনই বাক্য রূপে গন্য হলেও সমস্ত বাক্যকে কখনোই বচনের মর্যাদা দেওয়া যায় না। কেবলমাত্র ঘোষক বাক্যই বচন বলে গন্য হবে।
৮) বচনের সঙ্গে সত্যতার প্রশ্নটি ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। কারন প্রতেকটি বচনই হয় সত্য রূপে গন্য হবে অথবা মিথ্যা রূপে গন্য হবে। সত্য ও মিথ্যা ছাড়া বচনের আর তৃতীয় কোন শর্ত নেই।
৯) বচনের সত্যতার উপর যুক্তির বৈধতা নির্ভরশীল অর্থাৎ বচনের সত্য মিথ্যার সাহায্যেই যুক্তির বৈধতা নির্ণয় করা যেতে পারে।
১০) বচনের প্রয়োগ ক্ষেত্র বাক্যের প্রয়োগ ক্ষেত্রের অপেক্ষা অনেক কম কারন বচনকে আমরা শুধু মাত্র তর্কবিদ্যার যুক্তির ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে থাকি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বচনের প্রয়োগ দেখা যায় না।

আরও পড়ুনঃ
বচন কাকে বলে বচনের বৈশিষ্ট্য


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন