মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন ২০২১

 মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন উত্তর 2021
Madhyamik Geography Question Answer 2021

মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2021 (Madhyamik Geography Suggestion) এর প্রথম অধ্যায় বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর গুলি নিচে দেওয়া হলো। নিচে দেওয়া এই Madhyamik Geography Suggestion 2021 (মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2021) বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ অধ্যায় থেকে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন গুলি আগামী মাধ্যমিক ভূগোল 2021 সালের পরীক্ষায় খুবই আসার সম্ভবনা রয়েছে। তোমারা যারা এবছর মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল 2021 মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে, তারা নিচে দেওয়া প্রশ্নগুলো ভালো করে পড়লে নিশ্চয়ই অনেক ভালো রেজাল্ট করতে পারবেন। 

মাধ্যমিক ভূগোল ২০২১ - প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর

১. নদীর ষষ্ঠ ঘাতের সূত্র কী?
উত্তর : নদীর গতিবেগের সঙ্গে বহন ক্ষমতার সুনির্দিষ্ট সম্পর্ক আছে । দেখা গেছে নদীর গতিবেগ দ্বিগুণ হলে তার বহন ক্ষমতা বাড়ে ৬৪ গুণ  হারে । এটি হল ষষ্ঠ ঘাতের সূত্র , যার ব্যাখ্যা দেন ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে – W . Hopkins ।

২. নদী কাকে বলে?
যে জলস্রোত কোনো পর্বত, হ্রদ, প্রস্রবণ ইত্যাদি জলাধার হতে উৎপন্ন ও বিভিন্ন জনপদের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে অন্য কোনো জলাশয়ে পতিত হয়, তাকে নদী বলে। যেমন মেঘনা, যমুনা,সুরমা, গঙ্গা, বুড়িগঙ্গা ইত্যাদি নদী।

৩. বহির্জাত ভূমিরূপ প্রক্রিয়া কাকে বলে?
উত্তর:   ভূবহিস্থ বা পৃথিবীপৃষ্ঠের বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির মাধ্যমে । যান্ত্রিক ও রাসায়নিক পদ্ধতিতে ভূপৃষ্ঠের বিবর্তন ও পরিবর্তনকেই বহির্জাত ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া বলে ।

৪. নদী উপত্যকা কাকে বলে?
নদীর এক তীর থেকে অপর তীর পর্যন্ত একটি রেখার দ্বারা যুক্ত করলে যে পার্শ্বচিত্র গড়ে ওঠে, তাকে নদী উপত্যকা (River Valley) বলে ।

৫. জলবিভাজিকা কাকে বলে ?
পাশাপাশি অবস্থিত দুই বা ততোধিক নদী অববাহিকা যে উচ্চভূমি দ্বারা পৃথক থাকে, তাকে (Water-Shed Or, Water-Parting) বলে । সাধারণতঃ পাহাড় – পর্বত, মালভূমি ইত্যাদি জলবিভাজিকার ভূমিকা পালন করে ।

৬. গিরিখাত কাকে বলে?
বৃষ্টিবহুল অতি উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে নদীর নিম্নক্ষয়ের মাত্রা অত্যন্ত বেশি হওয়ায় নদী উপত্যকা সংকীর্ণ ও অতি গভীর হয় । এই ধরনের অতি গভীর ও সংকীর্ণ নদী উপত্যকাকেই গিরিখাত বলে । 

৭. ক্যানিয়ন কাকে বলে?
শুষ্ক অঞ্চলে নদী উচ্চগতিতে শুধুমাত্র নিম্নক্ষয়ের মাধ্যমে ‘ I ‘ আকৃতির গিরিখাত সৃষ্টি করলে তাকে ক্যানিয়ন বলে।

৮. আবদ্ধ শৈলশিরা কী ?
পার্বত্য অঞ্চলে নদীর প্রবাহপথে কঠিন শিলাসমূহ বাঁধার সৃষ্টি করলে নদী এঁকেবেঁকে চলতে শুরু করে । এর ফলে নদীর একটি পাড় অপর পাড়কে আড়াল করে রাখে । ফলে নদীর গতিপথ সোজাসুজি বেশী দূর পর্যন্ত দেখতে পাওয়া যায় না, দূর থেকে মনে হয় যেন শৈলশিরাগুলি আবদ্ধ বা শৃঙ্খলিত অবস্থায় রয়েছে, যে কারণে এদের আবদ্ধ শৈলশিরা বা শৃঙ্খলিত শৈলশিরা (Interlocking Spur) বলে ।

৯. প্রপাতকুপ কী?
নদীর গতিপথের যে অংশে জলপ্রপাতের জলধারা সজোরে এসে পড়ে সেখানে এই জলধারা সজোরে এসে পড়ার ফলে মন্থকূপের সৃষ্টি হয় যাকে প্রপাতকূপ [Plunge-pool] বলে ।

১০. স্বাভাবিক বাঁধ কী?
নদীর মধ্যপ্রবাহে ও বিশেষত নিম্নপ্রবাহে প্রায়শই পার্শ্ববর্তী দুকূলসংলগ্ন অঞ্চল বন্যার ফলে প্লাবিত হয় । কিছুদিন পর এই প্লাবনের জল সরে গেলে নদীবাহিত পলি, বালি, কর্দম প্রভৃতি নদীর দুই তীরে সঞ্চিত হয়ে ধীরে ধীরে বাঁধের মত উঁচু হয়ে যায় । প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হয় বলে এই ধরনের বাঁধকে স্বাভাবিক বাঁধ বা লেভি (Natural Levee) বলে ।

১১. হিমবাহ কাকে বলে?
হিমরেখার উপরে থাকে তুষারক্ষেত্র । সেখানে যে তুষারপাত হয় তা প্রথম অবস্থায় আলগা আলগা হয়ে পড়ে থাকে । ফরাসি ভাষায় একে নেভে (Neve) বলে । এই তুষারকণা ক্রমশ পরস্পরের সঙ্গে মিশে বরফের স্তরে (Ice Sheet) এ পরিণত হয় । ক্রমশ তা আরও জমাট বেঁধে ও আয়তনে বড় হয়ে বরফের স্তূপের আকার ধারণ করে । তারপর উপরের চাপ ও বরফের নিজস্ব উষ্ণতায় নীচের কিছু বরফ গলে গেলে সেই বরফের স্তূপ পর্বতের ঢালে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে ধীরে ধীরে নিচে নামতে শুরু করে । এই চলমান বরফের স্তূপকে হিমবাহ (Glacier) বলে ।

১২. হিমশৈল কাকে বলে?
উচ্চ অক্ষাংশে সমুদ্রে জলের উদ্ধদেশে হিমবাহের কিছু অংশ ভেঙে ভাসতে থাকে । সমুদ্রে ভাসমান এরূপ বিশালাকার বরফস্তূপকে হিমশৈল (Ice Berg) বলে ।

১৩. হিমরেখা কাকে বলে?
ভূ-পৃষ্ঠের উপর যে কাল্পনিক রেখার উপরে সারাবছর বরফ জমে থাকে এবং সেই রেখার নীচে বরফ নামলে তা গলে তরলে পরিণত হয় সেই কাল্পনিক রেখাকেই বলা হয় হিমরেখা।

১৪.  কিউসেক কী?
নদীর একটি নির্দিষ্ট অংশ দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যত ঘনফুট জল প্রবাহিত হয়, তাকেই বলে কিউসেক (cubic feet per second) । সুতরাং নদী প্রবাহ পরিমাপের একক হল কিউসেক।

১৫. পিরামিড চূড়া কী?
উপত্যকা হিমবাহের উৎসক্ষেত্রে ক্ষয়কাজের ফলে সার্কের সৃষ্টি হয় । যখন একটি পাহাড়ের বিভিন্ন দিক থেকে তিন-চারটি সার্ক পাশাপাশি এক সঙ্গে বিরাজ করে, তখন এদের মধ্যবর্তী খাড়া পর্বতচূড়াটিকে পিরামিডের মতো দেখায় । পিরামিডের মত আকৃতিবিশিষ্ট এই ধরনের পর্বতচূড়াকে পিরামিড চূড়া (Pyramidal Peak) বলে ।

১৬. গ্রাবরেখা কাকে বলে?
পার্বত্য অঞ্চল দিয়ে হিমবাহ প্রবাহিত হওয়ার সময় ক্ষয় পাওয়া শিলাখন্ড, নুড়ি, কাঁকর, বালি প্রভৃতি হিমবাহের সঙ্গে বয়ে চলে । এইসব বিচ্ছিন্ন ও ক্ষয়প্রাপ্ত শিলাখন্ড বা শিলাচূর্ণের কিছু অংশ হিমবাহের দু’পাশে, সামনে ও তলদেহে স্তূপাকারে সঞ্চিত হয় । এই সব সঞ্চিত শিলাস্তূপকে গ্রাবরেখা (Moraine) বলে ।

১৭. হিমদ্রোণি কাকে বলে?
হিমবাহ যে পার্বত্য উপত্যকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, ক্রমাগত ক্ষয়কার্যের ফলে উপত্যকাটি ইংরেজি ‘U’ আকার ধারণ করে, একে ‘U’-আকৃতির উপত্যকা বা হিমদ্রোণী বলে।

১৮. Basket of Eggs Relief’ বলতে কী বোঝো?
অনেক উঁচুজায়গা থেকে দেখলে ড্রামলিনগুলিকে ‘ডিম ভর্তি ঝুড়ি’ – র মত মনে হয় । ড্রামলিন অধ্যুষিত অঞ্চলকে তাই “Basket of Eggs Topography” বলে ।

১৯. ইনসেলবার্জ কী?
অনেক সময় মরুভূমির জায়গায় জায়গায় কঠিন শিলায় গঠিত অনুচ্চ ক্ষয়ীভূত পাহাড় টিলার আকারে বিক্ষিপ্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় । যুগ যুগ ধরে ক্ষয় পেয়ে এইসব পর্বতগাত্রের ঢাল খুব বেশি, পর্বতগাত্র মসৃণ এবং দেখতে গোলাকার হয় । গোলাকৃতি এইপ্রকার অনুচ্চ টিলাকে ইনসেলবার্জ (Inselberg) বলে ।

২০.বালিয়াড়ি কাকে বলে?
বায়ুর প্রবাহ পথে কোনো স্থানে বাধা পেলে যে উঁচু ও দীর্ঘ ঢিবির আকারে বালির স্তুপ গঠন করে, তাকে বালিয়াড়ি বলে। সাধারণত মরু অঞ্চলে বালিয়াড়ি দেখা যায়।

২১. সমপ্রায় ভূমি কাকে বলে?
নদীর জলপ্রবাহ ও অন্যান্য প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে কোনও প্রাচীন মালভূমি অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে ক্রমশ ক্ষয় পেতে পেতে এক সময় উঁচু-নীচু ঢেউ খেলানো ভূমি বা প্রায় সমতলভূমিতে পরিণত হলে তাদের সমপ্রায় ভূমি বলা হয় । সমপ্রায় ভুমির এখানে ওখানে ছোটো ছোটো পাহাড় বা মোনাডনক দেখা যায় ।

২২. অবরোহণ প্রক্রিয়া কাকে বলে?
যে সকল প্রক্রিয়া নগ্নীভবন এবং ক্ষয়ীভবনের দ্বারা ভূমির উচ্চতা হ্রাস করে তাকে অবরোহণ বলে।

২৩. আরোহণ প্রক্রিয়া কাকে বলে ?
যে প্রক্রিয়ায় ক্ষয়জাত পদার্থ ভূ-পৃষ্ঠের অবনমিত অংশে সঞ্চিত হয়ে উচ্চতা বৃদ্ধি করে তাকে আরোহণ বলে।

২৪. জলপ্রপাত কী ?
পার্বত্য প্রবাহে নদীর গতিপথে কঠিন শিলা ও কোমল শিলা অনুভূমিকভাবে অবস্থান করলে নদীর প্রবল স্রোতের ফলে কোমল শিলা কঠিন শিলা অপেক্ষা দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে খাঁড়া ঢাল সৃষ্টি করে । ফলে নদী ঐ খাঁড়া ঢালের উপর দিয়ে সরাসরি নিচে পড়তে থাকে । একে জলপ্রপাত (Waterfalls) বলে ।

২৫. নদীর পুনর্যৌবন লাভ বলতে কী বোঝো?
একটি ক্ষয়চক্র সম্পুর্ণ হতে দীর্ঘ সময় লাগে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা শেষ পর্যায়ে পৌছাবার আগেই সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের উন্নয়ন ঘটলে বা সমুদ্রজলতলের পরিবর্তন ঘটলে নদীঢালের সামঞ্জস্য নষ্ট হয় । এর ফলে নদী তার ঢালের সামঞ্জস্য পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্য নতুনভাবে তার ক্ষয়কার্য দ্রুত গতিতে শুরু করে অর্থাৎ নদী তার বার্ধক্য অবস্থা থেকে পুনরায় যৌবন অবস্থাপ্রাপ্ত হয় । একে নদীর পুনর্যৌবনলাভ (Rejuvenation) বলে ।

২৬. বাখান কী?
মরু অঞ্চলে বায়ুর প্রবাহপথের সঙ্গে আড়াআড়ি ভাবে যে অর্ধচন্দ্রাকৃতি বালিয়াড়ি সৃষ্টি হয়, তাকে বার্খান বলে।

২৭. পেডিমেন্ট কী?
মরু অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহ ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে পাহাড়ের পাদদেশে গঠিত শিলাময়, মৃদু ঢালযুক্ত, প্রায় সমতল ভূমিকে পেডিমেন্ট (Piedmont) বলে ।

২৮. বাজাদা কী ?
পেডিমেন্টের নিচের অংশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলধারা বাহিত হয়ে সুক্ষ্ম বালি, পলি প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে যে প্রায় সমভূমির ন্যায় ভুমিরূপ সৃষ্টি হয়, তাকে বাজাদা (Bajada) বলে ।          

২৯. লোয়েস কী?
অতিসূক্ষ্ম বালিকণা বায়ুপ্রবাহ দ্বারা পরিবাহিত হয়ে মরুভূমি সীমানার অনেক দূরে নিয়ে গিয়ে জমা হয়ে যে সমভূমি গঠন করে, তাকে লোয়েস সমভূমি (Loess Plain) বলে ।

৩০. করি বা সার্ক কাকে বলে?
হিমবাহের অত্যাধিক চাপ ও ঘর্ষনের ফলে উপত্যকার উপরের অংশ খুব খাড়াই হয় এবং মধ্যভাগে অনেকটা গর্তের মতো অবনত জায়গার সৃষ্টি হয় । এর ফলে পুরো উপত্যকাটির আকৃতি অনেকটা হাতল ছাড়া ডেক চেয়ারের মতো দেখতে হয় । এইরকম আকৃতিবিশিষ্ট উপত্যকাকে ফরাসি ভাষায় সার্ক (Cirque) এবং ইংরেজিতে কুম (Cumbe) বা করি (Corrie) বলে ।

আরও পড়ুনঃ

এই সাইটের মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আছে যেমন এই সাজেশন গুলি ফলো করলে আপনি পরিক্ষায় ৯০% কমন প্রশ্ন পাবেন। ছাত্র ছাত্রীদের সুবিধার জন্য অধ্যায়ভিত্তিক প্রশ্ন উত্তর রয়েছে। প্রতিটি বিষয়ের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। এখানে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সহ বিভিন্ন শ্রেণীর সমস্ত বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও সাধারণ জ্ঞান, বিভিন্ন পরিক্ষার প্রস্তুতি, বিজ্ঞান এবং কম্পিউটার প্রভৃতি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

আমাদের এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনার এই মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন গুলি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে সেয়ার করুন যাতে তারাও বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর জানতে পারে আর আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

1 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন